Tasnimul Hasan, [15.08.21 11:09]
'মুয়েজ্জা'
.
একদিন তার পবিত্র পরিচ্ছদের একাংশে বিড়ালটা পরম ভালোবেসে ঘুমিয়েছিলো। মুহাম্মদ ﷺ তাকে টেনে তোলেননি, পোশাক ঝাড়া দেননি, লাথি মেরে দূর দূর করে তাড়িয়েও দেননি। ঘুম ভেঙে যেতে পারে ভেবে, পাছে বিড়ালটির কষ্ট হয় — তাই গায়ে হাত বুলিয়ে ডাকও দেননি। তিনি যা করেছেন, তা কেউ কল্পনাও করতে পারবেনা — বাস্তবে করাতো অনেক দূরের ব্যাপার..
.মুহাম্মদ ﷺ আলতো করে ঘুমন্ত বিড়ালটার সমপরিমাণ জায়গা রেখে — বাকি কাপড়টুকু কেটে ফেলেছিলেন। ছেড়া পোশাকটি গায়ে চড়িয়ে দিব্যি নামাজে রওনা দিলেন।
.একদিন এক প্রসিদ্ধ সাহাবী বিড়াল ছানা কোলে নিয়ে খেলছেন। তিনি নতুন না, বেশ কবার বিড়াল কোলে নিয়ে আদর করতে করতে মসজিদে আসতেন। নবী মুহাম্মদ ﷺ এর কাছে ধর্ম শিক্ষা গ্রহণ করতেন। কোলে বিড়ালকে আদর করতে থাকা অবস্থায় মুহাম্মদ ﷺ তাকে কাছে ডাকলেন। এই বিড়ালের বাপ এদিকে আসো। ভদ্রলোকের ভ্রু কুঁচকে যায়নি, সরল বোকা মানুষের মতো মুচকি হাসলেন । প্রিয় শিক্ষকের এই ডাকটা তার মনে ধরেছে খুব। সিদ্ধান্ত নিলেন নিজের নামটাই বদলে ফেলবেন। নবীর ভালোবাসার নিদর্শনের দরুন আমরা সবাই তাকে বিড়ালের বাপ বলেই ডাকি। সহীহ হাদিসের সর্বোচ্চ পরিশুদ্ধ বর্ণনাকারী হিসেবে তিনিই 'আবু হুরায়রা' নামে পরিচিত।
.মক্কা সহ অসংখ্য গুরুত্বপূর্ণ মসজিদে বিড়ালের অবাধ অনুপ্রবেশ। এরা প্রত্যেক ইবাদতকারীর পাশেই ঘুমায়, গা ঘেঁষে বসে থাকে যেখানে সেখানে। মানুষের আদর ভালোবাসায় লাই দিয়ে গড়া অদ্ভুত এই বিলাসপ্রবণ প্রাণী!
.কাবশাহ্ বিনতু কা‘ব ইবনু মালিক (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি ছিলেন আবূ ক্বাতাদাহ্ (রা.)-এর পুত্রবধূ। আবূ ক্বাতাদাহ্ (রা.) তাঁর নিকট ছিলেন। তিনি তাঁর জন্য ওযুর পানি ঢাললেন। একটি বিড়াল এলো এবং ওযুর পাত্র হতে পানি পান করতে লাগলো। আর তিনি পাত্রটি তার জন্য কাত করে ধরলেন যে পর্যন্ত পান করা শেষ না হলো। কাবশাহ্ বলেন, তিনি আমার দিকে তাকিয়ে দেখলেন, আমি তাঁর দিকে চেয়ে আছি। তিনি আমাকে বললেন, আমার ভাতিজী! তোমার কাছে আশ্চর্য লাগছে? আমি বললাম, হ্যাঁ। তিনি বললেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, বিড়াল নাপাক নয়। এটা তোমাদের আশে পাশে ঘন ঘন বিচরণকারী বা বিচরণকারিণী।
(সহীহ : মালিক ৪৪, আহমাদ ২২০৭৪, আবূ দাঊদ ৭৫, তিরমিযী ৯২, নাসায়ী ৬৮, ইবনু মাজাহ্ ৩৬৭, দারিমী ৭৩৬, ইরওয়া ১৭৩)
.আব্দুল্লাহ্ ইব্ন মাসলামা—দাউদ ইব্ন সালেহ্ইব্ন দীনার আত-তাম্মার হতে তার মাতার সূত্রে বর্ণিত । একদা তাঁর মনিব তাকে হযরত আয়েশা (রা.)-র নিকট
“হারিসাহ্”-সহ প্রেরণ করেন। অতঃপর আমি তাঁর নিকট পৌছে দেখতে পাই যে, তিনি নামায রত আছেন। তিনি আমাকে (হারিসার পাত্রটি) রাখার জন্য ইশারা করলেন । ইত্যবসরে সেখানে একটি বিড়াল এসে তা হতে কিছু খেয়ে ফেললো হযরত আয়েশা (রা.) নামায শেষে বিড়ালটি যে স্হান হতে খেয়েছিল সেখান হতেই খেলেন এবং বললেন, নিশ্চয়ই রাসূল্লুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম বলেছেন, 'বিড়াল অপবিত্র নয়। এরা তোমাদের আশেপাশেই ঘুরাফেরা করে'। অতঃপর হযরত আয়েশা (রা.) আরো বলেন, 'আমি রাসূল্লুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বিড়ালের উচ্ছিষ্ট পানি দ্বারা উযু করতে দেখেছি'।
(সুনান আবু দাউদ, ৭৬)
.
Comments
Post a Comment
Comment your reading experience to us.