ইউটিউবে রোস্টার(ডিজিটাল গীবত) |
আসসালামু আলাইকুম।আপনারা কি জানেন গীবত কি?জানেন না? ঠিকাছে চলুন জেনে নেওয়া যাক।
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম। পুরোটা পরবেন।
হযরত আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, একদা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহি ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে প্রশ্ন করা হলো, গীবত কী? তিনি বললেন, তোমরা ভাইয়ের ব্যাপারে তোমার এমন কিছু বলা যা শুনলে সে অসন্তুষ্ট হয়। পুনরায় প্রশ্ন করা হলো, আমি যা বলি তা যদি আমার ভাইয়ের মধ্যে বর্তমান থাকে? তিনি বললেন, তুমি যা বলো তা যদি তার মধ্যে থাকে তাহলেই তুমি তার গীবত করলে। আর তুমি যা বলো তা যদি তার মধ্যে না থাকে তবে তুমি তাকে মিথ্যা অপবাদ দিলে। (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং ৪৮৭৪।)
কুরআনে এই গীবতের পরিণাম বুঝাতে ইরশাদ করেন-
وَلَا يَغۡتَب بَّعۡضُكُمۡ بَعۡضًاؕ اَيُحِبُّ اَحَدُكُمۡ اَنۡ يَّاۡكُلَ لَحۡمَ اَخِيۡهِ مَيۡتًا فَكَرِهۡتُمُوۡهُؕ وَاتَّقُوۡا اللّٰهَؕ اِنَّ اللّٰهَ تَوَّابٌ رَّحِيۡمٌ…
“আর তোমরা একে অপরের গীবত করোনা। তোমাদের কেউ কি এটা পছন্দ করবে যে, সে তার মৃত ভাইয়ের গোশত খাবে। নিশ্চয়ই তোমরা এটাকে অপছন্দ করবে। আর তোমরা আল্লাহকে ভয় করো। নিশ্চই আল্লাহ তাআলা সিমাহীন ক্ষমাকারী এবং দয়ালু।” (সূরা হুজরাত : ১২)
এখন হয়তো আপনার নাফস আপনাকে প্রশ্ন করছে?
গীবত তো আরেক জন করতেছে,আমি তো করতেছিনা।আমি তো শুধু শুনতেছি।
তাহলে ভাইয়া শুনেন,এই হাদিস টি আপনার জন্যঃ
গীবতকারী ও গীবত শ্রবণকারী উভয়ই সমান অপরাধে অপরাধী:এক সফরে হযরত আবু বকর (রা.) ও হযরত উমার (রা.) -র সাথে এক দরিদ্র খাদেম ছিল, সে সবসময় তাদের খেদমত করত। গন্তব্যে পৌঁছে তারা উভয়েই ঘুমিয়ে পড়লেন এবং কিছুক্ষণ পর সেও ঘুমিয়ে পড়লো তাদের উভয়ের জন্য খাবার তৈরি না করে। তাঁরা উভয়ে জাগ্রত হয়ে বলতে লাগলেন, এই লোকটা খুব ঘুমায়। তারা তাকে ঘুম থেকে তুলে মহানবী (সা.) -এর নিকট পাঠালেন। সে তার নিকট আবেদন করল, হে আল্লাহর রাসূল! হযরত আবু বকর (রা.) ও হযরত উমার (রা.) আপনাকে সালাম পাঠিয়েছেন এবং কিছু খাবার চেয়েছেন। রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন, তারা উভয়ে আহার করেছে এবং তৃপ্ত হয়েছে। তাঁরা উভয়ে তাঁর নিকট উপস্থিত হয়ে আরজ করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমরা আজ কি খেয়েছি? তিনি বলেন, তোমরা আজ ঐ খাদেমের গোশত খেয়েছ (গিবত করেছ) এবং আমি তোমাদের দাঁতে গোশতের রং দেখতে পাচ্ছি। তাঁরা উভয়ে এ কথা শুনে বলেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ! আমাদের ত্রুটি মাফ করুন এবং আল্লাহর দরবারে আমাদের জন্য প্রার্থনা করুন। রাসূলুল্লাহ্ (সা.) বলেন, আল্লাহর ক্ষমাই তোমাদের জন্য যথেষ্ট হবে না, খাদেম যেন তোমাদের জন্য আল্লাহর দরবারে ক্ষমা প্রার্থনা করে। (দিয়া আল-মুকাদ্দাসীর বরাতে আদদুররুল মানছুরে, কিমিয়ায়ে শাআদাত)।
হাদীস শরীফে এসেছে, ‘‘গবীত শ্রবণকারীও গীবতকারীদের একজন।’’ (তারাবানী)
গীবতের ভয়াবহতা বুঝানোর জন্যেই বহু হাদীস বর্ণিত হয়েছে হাদীসে রাসূল সা. ইরশাদ করেন- الغيبة أشد من الزناء “গীবত করা যিনা থেকেও মারাত্মক।” [মেশকাত, বায়হাকি]
হযরত আবূ বারযাহ আল-আসলামী (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহি ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, হে সেসব লোক যারা কেবল মুখেই ঈমান এনেছে কিন্তু ঈমান অন্তরে প্রবেশ করেনি! তোমরা মুসলিমদের গীবত করবে না ও দোষত্রুটি তালাশ করবে না। কারণ যারা তাদের দোষত্রুটি খুঁজে বেড়াবে আল্লাহও তাদের দোষত্রুটি খুঁজবেন। আর আল্লাহ কারো দোষত্রুটি তালাশ করলে তাকে তার ঘরের মধ্যেই অপদস্থ করে ছাড়বেন।(সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং ৪৮৮০)।
হযরত আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহি ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এরশাদ করেছেন মি’রাজের রাতে আমি এমন এক কওমের পাশ দিয়ে অতিক্রম করছিলাম যাদের নখগুলো তামার তৈরী এবং তা দিয়ে তারা অনবরত তাদের মুখমণ্ডলে ও বুকে আচড় মারছে। আমি বললাম, হে জিবরীল ! এরা কারা? তিনি বললেন, এরা সেসব লোক যারা মানুষের গোশত খেতো অর্থাৎ, মানুষের গীবত করত এবং মানুষের ইজ্জতের উপর হামলা করত।” এবং তাদের মানসম্মানে আঘাত হানতো। সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং ৪৮৭৮।
হযরত মুয়াজ ইবনে জাবাল (রাযি:) বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করিয়াছেন, যে ব্যক্তি আপন (মুসলমান) ভাইকে কোন এমন গুনাহের উপর লজ্জা দিল, যে গুনাহ থেকে সে তওবা করেছে, তবে এই লজ্জাদাতা ততক্ষন পর্যন্ত মৃত্য বরণ করবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত সে নিজে ঐ গুনাহের মধ্যে লিপ্ত না হবে। – তিরমিযী, মুন্তাখাব হাদীস (৩১৮ একরামে মুসলিম)
গীবতের ভয়াবহতা বুঝাতে গিয়ে রাসূল (সা:) বলেছেন যা মিশকাত শরীফে রয়েছে, গীবত করা যিনা থেকেও মারাত্মক গুনাহ। সাহাবায়ে কেরামগণ রাসূলে কারীম (সা:) কে জিজ্ঞেস করলেন হে আল্লাহর রাসূল (সা:) গীবত কিভাবে যিনা বা ব্যভিচার থেকে গুরুতর অপরাধ হয়? রাসূল (সা:) বললেন, ব্যভিচার করার পর মানুষ আল্লাহর নিকট তওবা করলে আল্লাহপাক তা কবুল করেন। কিন্তু গীবতকারী ব্যক্তিকে যতক্ষণ পর্যন্ত সে ব্যক্তি (যার গীবত করা হয়েছে) ক্ষমা না করে, ততক্ষণ পর্যন্ত আল্লাহ পাক মাফ করবেন না।
এছাড়া রোষ্টার রা ভিডিও তে বেপর্দা নারী ও অসংখ্য অশালীন ভিডিও ব্যাবহার করে যা আপনাকে চোখের যেনা করতে বাধ্য করে।এখন সিদ্ধান্ত আপনার আপনি কি করবেন।
আল্লাহ ভালো জানেন।
আল্লাহ সবাইকে সঠিক বুঝ দান করুন এবং হেদায়াত দান করুক।
আমিন।
Comments
Post a Comment
Comment your reading experience to us.